যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েমেন হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত, প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি হুথিদের।

 


যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েমেনে সামরিক হামলার পর হুথি গোষ্ঠী প্রতিশোধ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। শনিবারের ওই হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত এবং ১০১ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হুথিদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।


প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, হুথিদের বিরুদ্ধে এই হামলার নির্দেশ তিনি নিজেই দিয়েছেন এবং যতক্ষণ না তারা গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক পথগুলোতে হামলা বন্ধ করবে, ততক্ষণ যুক্তরাষ্ট্র “ধ্বংসাত্মক শক্তি” প্রয়োগ করতে থাকবে।


ইরান-সমর্থিত এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী ইয়েমেনের রাজধানী সানাসহ বেশ কিছু অঞ্চল দখলে নিয়েছে এবং গাজার যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় বাণিজ্যিক জাহাজ ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে।


শনিবার সন্ধ্যায় ইয়েমেনের সানা ও সৌদি সীমান্তবর্তী সা’দায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। ইয়েমেনি টিভি চ্যানেলে সম্প্রচারিত ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপের মাঝে মানুষ জীবিতদের খুঁজছে, বুলডোজার দিয়ে ধ্বংসাবশেষ সরানো হচ্ছে, আর অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছাচ্ছে।


ছবিতে দেখা গেছে, সানার বিমানবন্দরের উপর কালো ধোঁয়া উঠছে, যেখানে একটি সামরিক স্থাপনাও রয়েছে। এছাড়াও, হোদেইদা, বাইদা ও মারিবেও হামলার খবর পাওয়া গেছে।


এই হামলা এমন এক সময়ে হলো, যখন কয়েক দিন আগেই হুথিরা ঘোষণা দিয়েছিল যে, তারা ইয়েমেন উপকূলে ইসরায়েলি জাহাজগুলোর ওপর হামলা আবার শুরু করবে, কারণ ইসরায়েল গাজায় নতুন করে অবরোধ দিয়েছে, যা সাহায্য প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। তবে হুথিদের ওই ঘোষণার পর থেকে কোনো হামলার খবর পাওয়া যায়নি।


হুথিদের মুখপাত্র নাসের আল-দিন আমের রবিবার এনবিসি নিউজকে জানিয়েছেন, মার্কিন হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, তবে এনবিসি এই দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।


আমের বলেছেন, "গাজার অবরোধ না তোলা পর্যন্ত আমরা আমাদের অভিযান চালিয়ে যাব।" তিনি আরও বলেন, "আমরা সাম্প্রতিক এই হামলার প্রতিশোধ আরও বড় পরিসরে নেব। আমাদের প্রতিক্রিয়া দেরি হবে না।"


এদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানকে হুথিদের সমর্থন বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ডের জন্য তেহরানকে সম্পূর্ণ দায়ী করবে।


ইরানের বিপ্লবী গার্ডের কমান্ডার হোসেন সালামি ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, "কোনো শত্রু যদি আমাদের বিরুদ্ধে হুমকি কার্যকর করে, তাহলে আমরা কঠোর ও বিধ্বংসী প্রতিক্রিয়া জানাব।" তবে তিনি এটিও বলেছেন যে, হুথিরা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেয় এবং ইরান তাদের নীতি নির্ধারণে কোনো ভূমিকা রাখে না।


লাল সাগর দিয়ে বছরে এক ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশি বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহন হয়।


হুথিরা ২০২৩ সালের শেষের দিক থেকে গাজার যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় ১০০টিরও বেশি বাণিজ্যিক জাহাজে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে, এতে দুটি জাহাজ ডুবে গেছে এবং চারজন নাবিক নিহত হয়েছে। এসব হামলার কারণে কিছু শিপিং কোম্পানি ওই অঞ্চলে পরিষেবা বন্ধ করে দেয়।


এ মাসের শুরুতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও হুথিদের আবারও বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছেন। এর আগে, জো বাইডেন প্রশাসন মানবিক সংকটের কারণে এই তালিকা থেকে হুথিদের নাম সরিয়ে ফেলেছিল।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.